লন্ডন-প্যারিস-শ্রীলঙ্কার পর এবার দিল্লি! একেই কি বলা হয় ‘মাদার অফ স্যাটান’?

দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণে ব্যবহৃত ভয়ঙ্কর বিস্ফোরক TATP বা ‘মাদার অফ স্যাটান’ নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। বিশ্বজোড়া বহু বড় হামলায় ব্যবহৃত এই মারাত্মক বিস্ফোরক স্ক্যানারে ধরা পড়ে না এবং TNT–র প্রায় ৮০% শক্তি উৎপাদন করতে পারে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
Umar delhi blast


নিজস্ব সংবাদদাতা:  দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণে উঠছে ভয়ঙ্কর এক নাম—TATP, বা ট্রাই-অ্যাসিটোন ট্রাই-পেরক্সাইড। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দুনিয়ার কুখ্যাত এই বিস্ফোরকের আরেক নাম ‘মাদার অফ স্যাটান’। কারণ, এর অনিশ্চিত চরিত্র, মারাত্মক শক্তি এবং অতি-সংবেদনশীল আচরণ। তদন্তকারীদের দাবি, আত্মঘাতী হামলাকারী উমরের ব্যবহৃত বিস্ফোরকটির ধ্বংসাবশেষ ঘেঁটে যে রাসায়নিক উপাদানের ছাপ পাওয়া গিয়েছে, তা ‘উচ্চমাত্রার সম্ভাবনা’ তৈরি করছে TATP–এর উপস্থিতির।

বিশ্বজুড়ে বহু দুঃস্বপ্ন জাগানো হামলার সঙ্গে যুক্ত এই বিস্ফোরক—২০০৫ সালের লন্ডন আক্রমণ, ২০১৫-র প্যারিস হামলা, ২০১৯-এর শ্রীলঙ্কা বিস্ফোরণ—সব জায়গাতেই সন্দেহের তীর গিয়েছিল TATP–এর দিকে। সেই একই ধ্বংসাত্মক পর্যায়—এবার দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লায়।

সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, TATP–এ নাইট্রোজেন নেই। তাই প্রচলিত স্ক্যানার, মেটাল ডিটেক্টর বা বিস্ফোরক শনাক্তকারী যন্ত্র অনেকসময়ই এর উপস্থিতি ধরে ফেলতে পারে না। তদন্তকারীরা বাধ্য হন শুধু ধাতব কণা, পোড়া অবশেষ এবং সূক্ষ্ম রাসায়নিক ট্রেস ঘেঁটে প্রমাণ সংগ্রহ করতে। এর অস্থিতিশীল প্রকৃতি এমন যে নড়াচড়াতেও প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে—এই কারণেই এটি সন্ত্রাসীদের ‘প্রিয়’ এবং গোয়েন্দাদের ‘দুঃস্বপ্ন’।

delhi blastaaa

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, TATP TNT–র প্রায় ৮০ শতাংশ শক্তি দিতে সক্ষম—অর্থাৎ খুব কম পরিমাণেই ভয়াল ধ্বংসের ক্ষমতা রাখে। আরও উদ্বেগের বিষয়, বিশ্বের অনেক শিল্প এবং গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত কিছু সাধারণ রাসায়নিক থেকেই এর মূল উপাদান পাওয়া যায়। যদিও সেগুলিকে নিষিদ্ধ করা কঠিন, তবুও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বহু বছর ধরেই চেষ্টা করছে নজরদারির মাত্রা বাড়ানোর।

লালকেল্লার মতো উচ্চ-নিরাপত্তা এলাকায় এমন বিস্ফোরকের প্রবেশ গোটা তদন্তকে আরও জটিল করে তুলছে। উমর কীভাবে প্রযুক্তিগত জ্ঞান পেল, কোথা থেকে উপাদান জোগাড় করল, কারা তাকে সাহায্য করল—এই প্রশ্নগুলির উত্তরই এখন নিরাপত্তা ব্যবস্থার সামনে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।

দিল্লির হৃদয়ে বিস্ফোরণ শুধু ভবন বা প্রাণহানি নয়, রেখে গেল অত্যন্ত বিপজ্জনক ইঙ্গিত—বিশ্বের নয়া সন্ত্রাস-বিজ্ঞানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেল ভারতও।