খুন নাকি লুকোনো হচ্ছে সত্য? ইমরান খানকে ঘিরে তোলপাড় পাকিস্তান

ইমরান খানের মৃত্যু নিয়ে গুজবে উত্তাল পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলের বাইরে তীব্র বিক্ষোভ। জেল কর্তৃপক্ষ জানালেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
imran khan1.jpg


নিজস্ব সংবাদদাতা: পাকিস্তানের রাজনীতিতে ফের ভয়ংকর জল্পনা। খুন হয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান—এই গুজব ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। গত দু’দিন ধরে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরের আদিয়ালা জেল-এর বাইরে শুরু হয় তীব্র বিক্ষোভ। দাবি ওঠে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হয়তো জেলের ভিতরেই খুন করা হয়েছে।

এই গুজব আরও আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে যখন ইমরান খানের তিন বোন নরিন খান, আলিমা খান এবং উজমা খান তাঁকে দেখতে জেলে গেলে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরিবারের দাবি, গত তিন সপ্তাহ ধরে ইমরান খানের সঙ্গে কোনও আত্মীয়ের দেখার অনুমতি মিলছে না। সেই থেকেই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। রাস্তায় রাস্তায় স্লোগান ওঠে, বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, জেলের ভিতরেই ভয়ংকর কিছু ঘটে গিয়েছে।

হাজারো জল্পনার মাঝেই অবশেষে মুখ খুলল আদিয়ালা জেল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ইমরান খান জেলেই রয়েছেন এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তাঁকে অন্য কোথাও সরানো হয়নি, মৃত্যুর খবর সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন বলেই জানানো হয়েছে। তাঁর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থাও জেলের মধ্যেই করা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য। এই তথ্য প্রকাশ করেছে জিও নিউজ।

জেল কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়, আদিয়ালা জেল থেকে ইমরান খানকে স্থানান্তরের কোনও প্রশ্নই নেই। তিনি নিরাপদেই রয়েছেন। কিন্তু তাতেও আপাতত থামছে না জল্পনা। কারণ, পরিবার আগেই অভিযোগ করেছে, জেলে তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধানের উপর অমানবিক অত্যাচার চলছে এবং তাঁকে কার্যত নিঃসঙ্গ করে রাখা হয়েছে।

Imran khan

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে দুর্নীতির অভিযোগে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। এরপর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের হয়। ২০২৩ সাল থেকে তিনি জেলবন্দি। তাঁর দল ও পরিবার বারবার দাবি করেছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এর আগেও একাধিকবার তাঁর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। গত বছরও এই সময় খবর রটে যে জেলের ভিতর বিষক্রিয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তখনও প্রশাসনের তরফে সেই জল্পনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

এ বারও একই ছবি। জেল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করলেও দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ভয়, ক্ষোভ আর সন্দেহ পুরোপুরি কাটেনি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের রাজনীতি।