৮০ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম আগুন! হংকংয়ে মৃত ১২৮, শিউরে উঠছে বিশ্ব

হংকংয়ের তাই পো-র ওয়াং ফুক কোর্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত বেড়ে ১২৮। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। আগুন ছড়ানোর জন্য দাহ্য নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ সংস্থার তিন কর্তা গ্রেফতার।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
hongkong fire

নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রায় আট দশকের মধ্যে ভয়াবহতম অগ্নিকাণ্ড সাক্ষী রইল Hong Kong। তাই পো এলাকার ওয়াং ফুক কোর্টে আবাসিক প্রকল্পে ভয়াল আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল অন্তত ১২৮। ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে আরও দেহ উদ্ধারের পর শুক্রবার এই মর্মান্তিক সংখ্যা সামনে আসে। বুধবার রাত থেকে জ্বলতে থাকা আগুন মুহূর্তের মধ্যেই গ্রাস করে নেয় বাঁশের মাচায় ঘেরা আটটি ৩২ তলা টাওয়ার।

এই অগ্নিকাণ্ড হংকংয়ের ইতিহাসে ১৯৪৮ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সময় একটি গুদামে আগুনে প্রাণ গিয়েছিল ১৭৬ জনের। এ বারের ঘটনায় আগুন যেভাবে দ্রুত ওপর দিকে ছড়িয়ে পড়ে, তা দেখে অভিজ্ঞ উদ্ধারকারীরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, জানলা আটকে দেওয়া দাহ্য ফোম বোর্ড এবং ভবনের বাইরের দেওয়ালে ব্যবহৃত দাহ্য সামগ্রীই আগুনের তাণ্ডব বাড়িয়ে দেয়।

dead

এই ঘটনায় রেনোভেশনের কাজ করা সংস্থা  প্রেসটিজ কনস্ট্রাকশনের দুই ডিরেক্টর ও এক ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে Reuters। পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট ইলিন চুং জানিয়েছেন, “আমাদের যথেষ্ট কারণ আছে বিশ্বাস করার যে সংস্থার সিদ্ধান্তগ্রহণকারীরা চরম অবহেলা করেছেন।” গ্রেফতারের পাশাপাশি সংস্থার অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোন।

উদ্ধারকাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। শুক্রবারও ধ্বংসস্তূপে ঢুকে অ্যাপার্টমেন্ট ভেঙে ভেঙে খোঁজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। এখনও পর্যন্ত অন্তত ২৫টি সাহায্যের ফোন কলের কোনও হদিস মেলেনি। একটি কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে নীরবে অপেক্ষা করছেন নিখোঁজদের পরিবার। দগ্ধ ফ্ল্যাটগুলির ভিতরের ছবির মাধ্যমে তাঁদের প্রিয়জনদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। কান্না, নিস্তব্ধতা আর আতঙ্ক—সব মিলিয়ে সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ।

একদিকে মৃতের দীর্ঘ তালিকা, অন্যদিকে এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ—সব মিলিয়ে হংকং আজ শোকস্তব্ধ। এই অগ্নিকাণ্ড ভবিষ্যতের নির্মাণ নিরাপত্তা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলে দিল।