হংকং যেন আগুনের নগরী! সাতটি বহুতল ছাই, নিখোঁজ ৩০০

হংকংয়ে গত তিন দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত বেড়ে ৪৪। নিখোঁজ প্রায় ৩০০ জন। সাতটি বহুতল আবাসনে আগুন ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
breaking new 2


নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কেঁপে উঠল হংকং। গত তিন দশকের মধ্যে শহরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নিখোঁজ প্রায় ৩০০ জন বাসিন্দা। এখনও সাতটি বহুতল আবাসনের ভিতরে বহু মানুষ আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকারীরা। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হংকং ফায়ার সার্ভিস।

আগুন লাগে তাই পো জেলার একটি ৩২ তলা ভবনে। সেই সময় ভবনটিতে সংস্কারের কাজ চলছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকেই আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে পড়ে পাশের সাতটি বহুতল আবাসনে। মুহূর্তের মধ্যেই ভয়ংকর কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। বহু মানুষ দমবন্ধ হয়ে মারা যান, আবার অনেকের মৃত্যু হয়েছে আগুনে পুড়ে। আতঙ্কে বহু বাসিন্দা উপরতলা থেকে লাফিয়ে পড়ারও চেষ্টা করেন।

hongkong fire

খবর পেয়েই দ্রুত ১২৮টি দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সঙ্গে যায় ৫৭টি অ্যাম্বুল্যান্স। রাতভর চলে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যেই ন’শোর বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে উদ্ধার অভিযানের সময় এক দমকল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর মিলেছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে প্রথমে ‘চার নম্বর অ্যালার্ম’ জারি করা হলেও পরে ‘পাঁচ নম্বর অ্যালার্ম’ জারি করতে বাধ্য হয় প্রশাসন, যা হংকংয়ের সর্বোচ্চ বিপদ সংকেত হিসেবে ধরা হয়।

এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। ইতিমধ্যেই তিনজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। কীভাবে এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ল এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেন ব্যর্থ হল, সে সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই শুরু হয়েছে ব্যাপক তদন্ত।

তিন দশকে এমন ভয়াবহ বিপর্যয় হংকং দেখেনি বলেই দাবি প্রশাসনের। আধুনিক শহরের সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে এই অগ্নিকাণ্ড নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল বহুতল আবাসনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও। এখনও ধ্বংসস্তূপের ভিতরে নিখোঁজদের সন্ধানে চলছে মরিয়া উদ্ধার অভিযান।