“আমেরিকার ওপর আর ভরসা নয়”—কার্নির বিস্ফোরক মন্তব্য, ভারতের দিকে তাকাচ্ছে কানাডা

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির বক্তব্যে নতুন দিশা—মার্কিন নির্ভরতা কমিয়ে ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চাইছে কানাডা। দিল্লিতে বিদেশমন্ত্রী অনিতা আনন্দের সফরে ভারত–কানাডা সম্পর্কে গতি।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
canada pm

নিজস্ব সংবাদদাতা: কানাডা–ভারত সম্পর্কে ফিরছে উষ্ণতা। মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে অটোয়া—এমন এক সময়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি খুলে বললেন কূটনৈতিক সমীকরণ। দিলেন স্পষ্ট বার্তা—“আমেরিকার ওপর আর একা ভরসা নয়, ভারত ও চীনের সঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে।”

সাম্প্রতিক এক প্রেস কনফারেন্সে কার্নি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক নীতি বদলাচ্ছে, শুল্ক যুদ্ধে উত্তাপ বাড়ছে। বিশেষ করে রোনাল্ড রিগ্যানের বিজ্ঞাপন ঘিরে বিতর্কের পর পরিস্থিতি আরও টানটান। তার মাঝেই কানাডা চাইছে নতুন বাজার, নতুন বন্ধু। আর সেই তালিকায় উপরের দিকেই ভারত।

কার্নির কথায়,“চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন মোড়ে। ভারত–কানাডা সম্পর্কেও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। যদিও এখানে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা হয়নি, আমাদের বিদেশমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা ভারতের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে আলোচনা করেছেন। লক্ষ্য পরিষ্কার—আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাই।”

এর আগেই দিল্লিতে এসেছিলেন কানাডার বিদেশমন্ত্রী অনিতা আনন্দ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন—এই সফর দুই দেশের সম্পর্কে নতুন গতি দেবে। এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও তাঁর “গঠনমূলক আলোচনা” হয়েছে, যাতে দুই দেশের মধ্যে স্থগিত থাকা বিভিন্ন কূটনৈতিক প্রক্রিয়া আবার চালু হয়।

Modi

সব মিলিয়ে নয়া উষ্ণতার ইঙ্গিত স্পষ্ট—বিশেষত যখন ২০২৩-এ হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডে ভারতকে দোষারোপ করে সম্পর্কে তীব্র শীতলতা এনেছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। দিল্লি সেই অভিযোগকে বলেছিল—“সম্পূর্ণ অবাস্তব।”

এদিকে কার্নি নিশ্চিত করেছেন—চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণ তিনি গ্রহণ করেছেন। আগামী বছর বেইজিং সফরে যাবেন, ছ’বছর পর ফের কানাডা–চীন শীর্ষ বৈঠকের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। তবে দুই দেশের সম্পর্কের অতীত রিক্ততা এখনও টাটকা—চীনে কানাডীয় নাগরিক আটক, মৃত্যুদণ্ড, কানাডা–নির্বাচনে চীনা হস্তক্ষেপের অভিযোগ—সবই তাজা স্মৃতি।

তবুও রাজনৈতিক কূটনৈতিক হিসেব বলছে—গ্লোবাল টানাপোড়েনে নতুন মিত্র দরকার। আর তাই ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন পথ হাঁটছে কানাডা। উত্তর আমেরিকার শীতল বাতাস পেরিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দিকে তাকাচ্ছে অটোয়া। প্রশ্ন একটাই—এই নতুন বন্ধুত্ব কি সত্যিই পুরনো ক্ষত সারাবে?