দুই প্রজন্ম ধরে বিদেশে জন্ম? এবারও মিলবে কানাডিয়ান নাগরিকত্ব—ঘোষণা সংসদে

কানাডার নাগরিকত্ব আইনে বড় পরিবর্তন। বিল C-3 পাস হওয়ায় ‘লস্ট কানাডিয়ান’দের নাগরিকত্ব ফেরার পথ খুলল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত হাজারো পরিবার এবার বিদেশে জন্মানো সন্তানদেরও নাগরিকত্ব দিতে পারবেন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
breaking new 2

নিজস্ব সংবাদদাতা: কানাডার নাগরিকত্ব আইনে অবশেষে এল বহু প্রতীক্ষিত ঐতিহাসিক পরিবর্তন। দীর্ঘদিন ধরে যে “লস্ট কানাডিয়ান” সমস্যার কারণে হাজারো ভারতীয়–উৎপত্তির পরিবার নাগরিকত্ব পেতেন না বা তাদের বিদেশে জন্মানো সন্তানরা আইনের খুঁতিতে বঞ্চিত হতেন, সেই অন্যায় কাটাতে সংসদে পাশ হল Bill C-3। রাজকীয় অনুমোদনও মিলে গেছে। ফলে আইনটি দ্রুত কার্যকর হওয়ার পথে।

২০০৯ সালে পরিবর্তিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, কানাডার কোনও নাগরিক যদি বিদেশে জন্ম নেন, তবে তিনিও বিদেশে সন্তানের জন্ম দিলে সেই সন্তান স্বয়ংক্রিয়ভাবে কানাডার নাগরিকত্ব পেত না। এই নিয়ম বহু পরিবারকে বিপাকে ফেলেছিল। অভিবাসী সমাজে জন্ম নেয় হাজারো “লস্ট কানাডিয়ান”—যারা কানাডাকে নিজের দেশ মনে করেও নাগরিকত্ব পেতেন না শুধুমাত্র আইনের কঠোরতার জন্য।

কিন্তু নতুন আইন সেই বৈষম্য সরাসরি ভেঙে দিল। কানাডার ইমিগ্রেশন মন্ত্রী লিনা দিয়াব জানিয়েছেন, দেশের নাগরিকত্ব আইনে এতদিন ধরে যে অবিচার চলছিল, Bill C-3 সেই ভুল শুধরে ন্যায্য সুযোগ ফিরিয়ে আনবে। আধুনিক পরিবারের বাস্তবতার সাথে মেলানো হবে নাগরিকত্বের নিয়ম।

নতুন আইনে স্পষ্ট করা হয়েছে যে কানাডিয়ান বাবা–মায়ের সন্তান বিদেশে জন্মালেও তিনি নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবেন—যদি অন্তত তিন বছর বাবা বা মা কানাডায় বসবাস করে থাকেন। এটি “substantial connection” হিসেবে ধরা হবে। এতে যেসব পরিবার বছরের পর বছর ধরে আইনি টানাপোড়েনে ছিলেন, তাদের জন্য রাস্তা খুলে গেল।

canada aa

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট ঘোষণা করেছিল যে পুরনো আইন সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সরকার সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করেনি, কারণ তারাও বুঝেছিল যে বাস্তবে এই আইন বহু মানুষের জীবনে অযথা সংকট তৈরি করেছে।

এখন নতুন আইন বলবে—আগের নিয়মের কারণে যারা নাগরিকত্ব পাননি কিন্তু পাওয়ার যোগ্য ছিলেন, তারা সবাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্বের অধিকার ফিরে পাবেন। এতে কানাডায় থাকা বিপুল সংখ্যক ভারতীয় পরিবারে স্বস্তি ফিরেছে।

কানাডার অভিবাসন মহলে এখন সাজো সাজ নতুন আশার আলো। বহু বাবা–মা যাদের সন্তান বিদেশে জন্মানোর কারণে ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন, তারা এখন নিশ্চিত হতে পারছেন—তাদের সন্তানও কানাডার পরিচয় নিয়ে বড় হতে পারবে।