বাচ্চারা হাত ধরে ছিল… তারপর শুধু ধোঁয়া, মেক্সিকোর একটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু

মেক্সিকোতে একটি দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
mexico blast

নিজস্ব সংবাদদাতা: উৎসবের রঙ মিলল কান্নায়। প্রিয়জনকে স্মরণ করার দিনে মৃত্যুর কালো ছায়া—মেক্সিকোর সোনোরা প্রদেশের হার্মোসিলো শহরে ভয়াবহ আগুনে মৃত্যু হল অন্তত ২৩ জনের। আহত আরও বহু মানুষ। শনিবার ‘ডে অফ দ্য ডেড’ উৎসবের মাঝে শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি জনপ্রিয় ডিসকাউন্ট দোকান হঠাৎ আগুনে পুড়ে যায়। কয়েক মিনিটেই আনন্দ ভেসে গেল আর্তনাদে, উদ্‌যাপন বদলে গেল শোকে।

ওই দোকানটি ছিল ওয়ালডোস নামের সস্তা পণ্যের চেইনের অংশ। দুপুরের ব্যস্ত সময়ে পরিবার নিয়ে অনেকেই এসেছিলেন কেনাকাটা করতে। উৎসবের ছুটির দিন, শিশুদের হাত ধরে মায়ের হাসি, মুখোশ-ফুল-সুগন্ধি—সবই ছিল… আর এক মুহূর্তেই চারপাশ ভরে উঠল ধোঁয়া, আতঙ্ক আর চিৎকারে।
রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, অধিকাংশ মানুষ ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। শিশুদেরও মৃত্যু হয়েছে—এই তথ্য শোনার পরই স্তব্ধ হয়ে যায় শহর।

রাজ্যের গভর্নর আলফোনসো দুরাজো ভিডিও বার্তায় জানান—পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। কীভাবে আগুন লাগল, তা জানতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনেক মিডিয়া বলছে, হয়তো বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণেই আগুন। তবে শহর প্রশাসন নিশ্চিত করেছে—এটি কোনো হামলা নয়। শহরের ফায়ার সার্ভিস প্রধান জানিয়েছেন, বিস্ফোরণ হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Fire

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম শোকপ্রকাশ করেছেন। বলেছেন, মৃতদের পরিবারের পাশে তিনি আছেন। তৎক্ষণাৎ সাহায্য দল পাঠানো হয়েছে। রেড ক্রসের ৪০ জন সদস্য, ১০টি অ্যাম্বুল্যান্স কয়েকদফায় আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

যেখানে আজ স্বজনদের ছবি সাজিয়ে ফুলে ভরার কথা ছিল, সেই শহরে এখন কেবল ধোঁয়ার দাগ আর ভাঙা মন। এই দুর্ঘটনার পর বহু পরিবার বলছে—“যাদের স্মরণে আজ মোম জ্বালিয়েছিলাম, তাদের সঙ্গেই বিদায় নিল আরও প্রাণ…”

হার্মোসিলোর রাত এখন নিস্তব্ধ। শুধু নীরব কান্না আর শোকবিহ্বল শহর জানিয়ে দিচ্ছে—উৎসব মানেই সুখ নয়, কখনও কখনও সে এনে দেয় অন্তহীন বেদনা।