একই পরিবারের ১৩ জনকে হত্যা! প্রকাশ্যে মৃত্যুর সাজা দেখতে জমা হল ৮০ হাজার লোক

আফগানিস্তানের খোস্তে ১৩ জনের খুনের সাজায় জনসমক্ষে গুলিতে মৃত্যুদণ্ড। ৮০ হাজার মানুষের ভিড়ে তালিবানের বিচার ঘিরে তীব্র আন্তর্জাতিক নিন্দা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
fghanistan

নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৩ জন এক পরিবারের সদস্যকে খুন করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করল তালিবাম। মঙ্গলবার আফগানিস্তানের খোস্ত প্রদেশে একটি স্টেডিয়ামে এই প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ওই ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল বলে খবর। এই ঘটনায় বিশ্বের নানা মানবাধিকার সংগঠন তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

খোস্তের একটি ক্রীড়া স্টেডিয়ামে এই ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তালিবান আগেই ক্যামেরা লাগানো মোবাইল ফোন নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ করেছিল। তবু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের ভিতরে ও বাইরে হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে, সঙ্গে ধর্মীয় স্লোগানও উঠছে।

তালিবান কর্তৃপক্ষ জানায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম মাঙ্গল। অভিযোগ, প্রায় ১০ মাস আগে সে স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল রহমান এবং তাঁর পরিবারের আরও ১২ জন সদস্যকে খুন করে। নিহতদের মধ্যে ৯ জনই ছিল শিশু। তালিবানের দাবি, নিম্ন আদালত, আপিল আদালত এবং সুপ্রিম কোর্ট—তিন স্তরের বিচার প্রক্রিয়াতেই মাঙ্গল দোষী সাব্যস্ত হয়।

pakistan taliban

আফগান সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে এক ১৩ বছরের কিশোর, যিনি এই খুনের ঘটনায় একমাত্র জীবিত ছিলেন এবং নিজের পরিবারের প্রায় সবাইকে হারিয়েছেন। তালিবানের কিসাস বা প্রতিশোধ আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নিহতের পরিবার চাইলে খুনিকে ক্ষমা করতে পারে। কিন্তু ওই কিশোর ক্ষমা করতে অস্বীকার করে নিজেই গুলি চালায়।

আফগানিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এই মৃত্যুদণ্ড ‘আল্লার নির্দেশ’ অনুযায়ী কার্যকর করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তা ও ইসলামি আইন পুরোপুরি কার্যকর করার জন্য প্রার্থনাও করা হয় বলে জানানো হয়েছে। তালিবানের মুখপাত্ররাও জানিয়েছেন, সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া মেনেই এই সাজা কার্যকর হয়েছে।

এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলির মতে, এই ঘটনা তালিবান শাসনের কঠোর ও ভয়ংকর বিচার ব্যবস্থারই একটি ভয়াবহ উদাহরণ।