আকাশে আগুন, রানওয়েতে বিস্ফোরণ! আমেরিকায় কার্গো প্লেন বিধ্বস্ত, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

যুক্তরাষ্ট্রের লুইসভিলে UPS কার্গো প্লেন বিধ্বস্ত, মৃত অন্তত তিন, আহত ১১। উড্ডয়নের মুহূর্তে বিস্ফোরণ, আগুনে ভস্মীভূত বিমান। প্লেনে ছিল বিপুল জ্বালানি। উদ্ধার চলছে, মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
argo plane blast

নিজস্ব সংবাদদাতা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির লুইসভিলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিস্ফোরণ, আগুনে ঘেরা কার্গো প্লেন। UPS–এর বিশাল কার্গো বিমানটি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মুহাম্মদ আলি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে হাওয়ায় উঠতেই ভয়ঙ্করভাবে নিচে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আগুনের গোলায় পরিণত হয় গোটা বিমান। অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন, আহত ১১ জন। গভর্নর জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রাতভর ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চলছে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি হাওয়াইয়ের হনলুলুর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। উড্ডয়ন মূহুর্তেই বিমানের বাঁ-ডানা দিয়ে আগুনের জ্বলন্ত লেলিহান শিখা বেরোতে দেখা যায়, মুহূর্তে আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে—বিমানটি মাটি থেকে খানিকটা ওপরে উঠতেই আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রানওয়েতে সজোরে ধাক্কা মারে। তারপরই ভয়াল বিস্ফোরণ, তীব্র আগুন আর কালো ধোঁয়ার খাম্বা। আশপাশের একাধিক কর্মী, ট্রাক ও টার্মিনাল ভবনে ছড়িয়ে পড়েছে আগুনের তাপসঞ্চার ও ছিটকে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ।

লুইসভিলের মেয়র ক্রেগ গ্রিনবার্গ জানিয়েছেন, বিপদের মাত্রা আরও চড়িয়ে তুলেছিল বিমানে থাকা বিশাল পরিমাণ জ্বালানি। তাঁর দাবি, প্লেনে ছিল প্রায় ২.৮ লক্ষ গ্যালন জেট ফুয়েল। যা এক মুহূর্তে আগুনের বিভীষিকাকে চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। দমকল বাহিনী ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পর বহুক্ষণ ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে মরিয়া চেষ্টা চালায়।

dead

ঘটনাস্থলটি UPS–এর বিশ্বের বৃহত্তম এয়ার হাবের পাশে। প্রতিদিন এখানে প্রায় ৩০০টি বিমান ওঠানামা করে, ঘণ্টায় ৪ লক্ষেরও বেশি পার্সেল বাছাই হয়। কয়েক হাজার কর্মীর ব্যস্ততার মাঝেই ঘটে এই মরণভয়াবহ দুর্ঘটনা। আগুনের দাপটে একটি নিকটবর্তী ভবনের ছাদও আংশিক ধ্বংস হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এই দুর্ঘটনা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সরকারি সূত্রের দাবি, উদ্ধার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আগুনের তীব্রতা ও ঘন ধোঁয়া। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বিমানে থাকা অন্যদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। তদন্ত শুরু করেছে NTSB ও FAA। প্রশ্ন উঠছে—এটা কি যান্ত্রিক ত্রুটি, পাইলটের ভুল, নাকি আরও কোনো ভয়ঙ্কর কারণ লুকিয়ে রয়েছে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বিপুল জ্বালানি নিয়ে বিমান দুর্ঘটনা—তার জেরে ভয়াবহ পরিণতি অবশ্যম্ভাবী। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—এই ভয়াল দুর্ঘটনা কি রোধ করা যেত? না কি আরও বড় নিরাপত্তা ফাঁক ধরা পড়ল আমেরিকার অন্যতম ব্যস্ত এই কার্গো হাবে?