জাতের বাধায় প্রেমিক খুন! মৃতের রক্তে সিঁদুর পরলেন প্রেমিকা

মহারাষ্ট্রের নানদেদে জাতপাতের বাধায় যুবক খুনের অভিযোগ। প্রেমিকার দাবি, ধর্ম পরিবর্তন করতেও রাজি ছিল নিহত যুবক। শেষকৃত্যের আগে স্ত্রীর আচার পালন করে চাঞ্চল্য।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
breaking new 1

নিজস্ব সংবাদদাতা:  মহারাষ্ট্রের নানদেদ শহরে ২৩ বছরের এক যুবকের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘিরে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিহত যুবকের প্রেমিকা আঁচল সোমবার দাবি করেছেন, তাঁর প্রেমিক তপশিলি জাতিভুক্ত হওয়ায় তাঁদের বিয়েতে রাজি ছিল না তাঁর পরিবার। এমনকি, ভালবাসার মানুষকে বাঁচাতে ধর্ম পরিবর্তন করতেও রাজি ছিলেন ওই যুবক। তবুও তাঁকে পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ প্রেমিকার।

আঁচল জানিয়েছেন, তিন বছর ধরে তাঁদের সম্পর্ক ছিল। পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পারার পর থেকেই বিয়ের বিরুদ্ধে ছিল। পরিবার থেকে বলা হয়েছিল, তাঁকে বিয়ে করতে চাইলে যুবককে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। সে কথাতেও রাজি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আঁচলের অভিযোগ, তাঁর পরিবার শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিল, কবে তাঁকে খুন করা যাবে।

Maharashtra girlfriend

আঁচল আরও জানান, যেদিন যুবককে খুন করা হয়, সেদিন সকালে তাঁরা ফোনে কথা বলেছিলেন। তিনি স্টেশনে নিজের কাকিমাকে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। পরের দিন খবরের কাগজে এই হত্যাকাণ্ডের খবর পড়ে তিনি জানতে পারেন। তাঁর দাবি, পরিবারের কেউ তাঁকে আগে কিছু জানায়নি।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগে আঁচল বলেন, ঘটনার দিন তাঁর দাদা তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে প্রেমিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে চাপ দেন। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। তাঁর আরও দাবি, ওই সময় এক পুলিশকর্মী তাঁর দাদাকে মন্তব্য করেন, মিথ্যা মামলা করার বদলে সরাসরি খুন করেই থানায় আসুক। দাদা সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সত্যিই খুন করে বলে অভিযোগ আঁচলের।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের ইটওয়ারা এলাকার মিলিন্দ নগরে। নিহত যুবক সক্ষম টাটে ও আঁচল তিন বছর ধরে সম্পর্কে ছিলেন। তাঁদের পরিচয় বন্ধুত্ব থেকে গভীর প্রেমে বদলেছিল। সক্ষম প্রায়ই আঁচলের বাড়িতে যেতেন, কারণ তিনি তাঁর দাদার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তবে দুই জনের জাত আলাদা হওয়ায় এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি আঁচলের পরিবার।

প্রেমিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে আঁচল তাঁর বাড়িতে পৌঁছন। শেষকৃত্যের আগে তিনি কার্যত স্ত্রীর মতো সব আচার পালন করেন। প্রেমিকের দেহে হলুদ লাগান, কপালে সিঁদুর দেন এবং নিজের সিঁথিতেও সিঁদুর পরেন। এই দৃশ্য ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আঁচল। তাঁর স্পষ্ট দাবি, যাঁরা এই খুনের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের ফাঁসি হওয়া উচিত।