“আজকের সকালই বার্তা দেওয়ার সময়”— লালকেল্লা বিস্ফোরণের পর আইসিস অভিযুক্তকে জামিনে ছাড়ল না সুপ্রিম কোর্ট

লালকেল্লা বিস্ফোরণের পর বড় পদক্ষেপ! সুপ্রিম কোর্ট আইসিস যোগে অভিযুক্তকে জামিনে ছাড়ল না। বিচারপতির মন্তব্য— “আজকের সকালই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ার সেরা সময়।”

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
Supreme court

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা: দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যুর পরের দিনই বড় পদক্ষেপ নিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার আদালত জানিয়ে দিল, আইসিস (ISIS)–এর সঙ্গে যোগের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এক ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া হবে না। বিচারপতি বিক্রম নাথ ও সন্দীপ মেহতা-র বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে বলেন, “এই সকালটাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ার সেরা সময়।”

ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে জানান, “কালকের ঘটনার পর হয়তো আজ এই মামলা তর্ক করার সঠিক সময় নয়।” তখনই বেঞ্চের তীব্র পর্যবেক্ষণ— “ঠিক তাই, এই সকালেই দেশকে বার্তা দেওয়া দরকার— যারা দেশে ভয় ও বিশৃঙ্খলা ছড়াতে চায়, তাদের জন্য কোনো ছাড় নেই।”

এই মামলাটি মূলত মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের জানুয়ারি মাসের জামিন প্রত্যাখ্যানের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল হিসেবে শোনা হচ্ছিল। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ— তিনি আইসিসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভারতে একটি “রিং অব টেরর” বা সন্ত্রাসের জাল তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। মামলাটি তদন্ত করছে NIA (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি), আর অভিযুক্তকে ২০২৩ সালের মে মাসে গ্রেফতার করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় বিচারপতিরা অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, “তদন্তে কী উদ্ধার হয়েছে?” উত্তরে আইনজীবী জানান, “কোনো বিস্ফোরক উদ্ধার হয়নি, শুধুমাত্র কিছু ইসলামিক সাহিত্য।”

তাতে আদালতের প্রশ্ন, “তাহলে আইসিসের মতো হুবহু নাম ও লোগো দিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের উদ্দেশ্য কী ছিল?” বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, “অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আপনি দেশজুড়ে অশান্তি তৈরির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত। দুঃখিত, জামিন সম্ভব নয়।”

delhi blast

আইনজীবী শেষ চেষ্টা করে জানান, অভিযুক্ত প্রায় আড়াই বছর ধরে হাজতে, এবং তিনি ৭০ শতাংশ শারীরিকভাবে অক্ষম। কিন্তু বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়— “যখন অভিযোগ গুরুতর, তখন মানবিকতা নয়, দেশের নিরাপত্তাই অগ্রাধিকার।”

তবে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ট্রায়াল কোর্ট আগামী দুই বছরের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করবে। আর যদি ওই সময়ের মধ্যে মামলা শেষ না হয় এবং বিলম্ব অভিযুক্তের দোষে না হয়, তবে তখন সে আবার জামিনের আবেদন করতে পারবে।

মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের আগের পর্যবেক্ষণেও বলা হয়েছিল, অভিযুক্ত ২০২০ সালের লকডাউনের সময় বিতর্কিত ইসলামিক প্রচারক জাকির নায়েকের ভিডিও দেখে ধর্মীয় তুলনামূলক অধ্যয়ন শুরু করেন এবং সেখান থেকেই আইসিস-প্রেরণায় প্রভাবিত হন। তদন্তে আরও জানা যায়, তিনি ও তাঁর সহচররা জবলপুরের এক অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন, যাতে আইসিসের জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করা যায়।

সুপ্রিম কোর্টের এই কঠোর বার্তার পর, বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে— লালকেল্লা বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে আদালতের মন্তব্য আসলে দেশজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এক প্রতীকী সতর্কবার্তা।