“কালই দেখা যাবে সিন্ধ ভারতের অংশ”— পাকিস্তানকে চাপে ফেলে বিস্ফোরক মন্তব্য রাজনাথ সিংয়ের

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সিন্ধ প্রসঙ্গে বললেন, সীমান্ত বদলাতে সময় লাগে না, একদিন হয়তো সিন্ধ আবার ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
aaaa


নিজস্ব সংবাদদাতা:  ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ফের এক ইতিহাসভিত্তিক সংবেদনশীল ইস্যুকে সামনে এনে রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুললেন। রবিবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, সিন্ধ আজ ভারতের ভৌগোলিক সীমার মধ্যে না থাকলেও ভারতের সভ্যতার ধারায় সিন্ধ চিরকালই ভারতের অংশ ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তাঁর কথায়, সময়ের সঙ্গে সীমান্ত বদলাতে পারে এবং একদিন হয়তো সিন্ধ পুনরায় ভারতের সঙ্গেই যুক্ত হতে পারে।

১৯৪৭ সালের বিভীষিকাময় দেশভাগের সময় সিন্ধ অঞ্চল পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায়। সেখানকার বিপুল সংখ্যক সিন্ধি হিন্দু বাধ্য হয়ে ভারতে চলে আসেন। পবিত্র সিন্ধু নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতির গভীর যোগ বহুবারই আলোচিত হয়েছে। সেই প্রসঙ্গেই রাজনাথ সিং এদিন উল্লেখ করেন প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী এলকে আদবাণীর মন্তব্য—সেই প্রজন্মের সিন্ধি হিন্দুরা কখনোই সিন্ধের বিচ্ছেদ সহজে মেনে নিতে পারেননি।

রাজনাথ সিং বলেন, “আজ সিন্ধ ভারতের মানচিত্রে না থাকলেও সভ্যতার মানচিত্রে সিন্ধ আজও আমাদেরই অংশ। আর সীমান্ত বদলাতে কতক্ষণ? কে বলতে পারে—আগামী দিনে হয়তো সিন্ধ আবার ভারতের সঙ্গেই যুক্ত হবে।” তাঁর এই মন্তব্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিন্ধি সম্প্রদায়ের মানুষের চোখে জল আসে। দেশভাগের ক্ষত আবারও মনে করিয়ে দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

rajnath singh fic.jpg

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানে থাকা সিন্ধ অঞ্চলের বহু মুসলমানও একসময়ে ইন্দুস নদীর জলকে পবিত্র বলেই মনে করত। সেই যৌথ সাংস্কৃতিক ইতিহাস আজও দুই দেশের মানুষের মনকে যুক্ত করে রেখেছে।

সভায় তিনি সিন্ধি সম্প্রদায়ের সংগ্রামের কথাও তুলে ধরেন। দেশভাগের পরে একেবারে শূন্য হাতে নতুন দেশে নিজেদের জীবন গড়ে তুলতে হয়েছিল তাঁদের। কাজ, ব্যবসা, সমাজসেবা—প্রতিটি ক্ষেত্রেই সিন্ধি সম্প্রদায়ের অবদানকে তিনি ভারতীয় উন্নয়নের অন্যতম শক্তি বলে উল্লেখ করেন।

এর আগে মরক্কোয় ভারতীয় সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ভিতরেই নাকি আজ ‘ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার’ স্লোগান উঠছে, এবং ভবিষ্যতে আগ্রাসন নয়, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই পিওকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।

এই ধারাবাহিক মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে নতুন জল্পনা—প্রতিরক্ষামন্ত্রী কি শুধু ইতিহাসের স্মৃতি টানছেন, নাকি কূটনৈতিক বার্তা দিচ্ছেন? আপাতত দিল্লি থেকে ইসলামাবাদ—রাজনাথের মন্তব্য ঘিরে তুমুল আলোচনা।