তল্লাশিতে মেলে অস্ত্রের স্তূপ! দেশবিরোধী কাজে মদতের অভিযোগে কাঁপছে সাংবাদিক মহল

জম্মু–কাশ্মীরের কাশ্মীর টাইমস অফিসে এসআইএ তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করেছে পিস্তল, কার্তুজ, একে–৪৭ রাউন্ড ও গ্রেনেড লিভার। দেশবিরোধী কাজ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে দায়ের হয়েছে এফআইআর।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
fire arms

নিজস্ব সংবাদদাতা:  জম্মু–কাশ্মীরের অন্যতম পুরনো সংবাদমাধ্যম কাশ্মীর টাইমস–এর জম্মু অফিসে হঠাৎ করেই শুক্রবার তল্লাশি চালাল সেখানকার বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা এসআইএ। অভিযোগ, এই সংস্থা নাকি দীর্ঘদিন ধরে দেশবিরোধী কার্যকলাপে মদত দিয়েছে, অস্ত্র মজুত করেছে এবং বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রশ্রয় দিয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলা ব্যাপক তল্লাশিতে অফিসের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে পিস্তল, কার্তুজ, একে–৪৭–এর রাউন্ড এবং তিনটি গ্রেনেড লিভার—যা নিয়ে উপত্যকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

এসআইএ–র দাবি, ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কাশ্মীর টাইমসের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি নাকি দীর্ঘদিন ধরে দেশবিরোধী সংগঠনগুলির সঙ্গে গোপনে জোট বেঁধেছিল। এই অভিযোগেই এফআইআর দায়ের হয়েছে। সেখানে নাম রয়েছে সংবাদমাধ্যমটির কার্যনির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা ভাসিনেরও।

তবে অনুরাধা ভাসিন অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “অফিসটি বছরের পর বছর বন্ধ। আমি জানিও না তারা সেখানে কী খুঁজছিল। আমি অবাক হয়েছি, কিন্তু বিস্মিত নই। এটা স্পষ্টভাবে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা।” তাঁর বক্তব্য উদ্ধৃত করেছে আউটলুক।

Arms

এসআইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী নেটওয়ার্ক ও দেশবিরোধী চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগেই রেসিডেন্সি রোডের ওই অফিসে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই অভিযান হয়। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে রাজনৈতিক মহলে এই তল্লাশি ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জম্মু–কাশ্মীরের উপ–মুখ্যমন্ত্রী সুরিন্দর সিং চৌধুরী বলেছেন, তল্লাশি প্রমাণের ভিত্তিতেই হওয়া উচিত। কারও চাপে বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তা হওয়া অনুচিত। যদি দোষী হয়, শাস্তি প্রাপ্য। কিন্তু শুধু ভয় দেখানোর জন্য এমন হানা হলে তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

পিডিপি নেত্রী ইলতিজা মুফতি এই অভিযানের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “কাশ্মীর টাইমস উপত্যকার সেই কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের একটি, যারা কখনও হুমকির কাছে মাথা নত করেনি। দেশবিরোধী কাজের অজুহাতে তল্লাশি চালানো হাস্যকর এবং স্বৈরাচারের গন্ধ পাচ্ছি।”

পিডিপি ইউথ প্রেসিডেন্ট আদিত্য গুপ্তও বলেন, “কাশ্মীর টাইমস বরাবরই মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিখোঁজ হওয়া, প্রশাসনের ব্যর্থতা—সবকিছু নির্ভীকভাবে তুলে ধরেছে। বেদ ভাসিন ও অনুরাধা ভাসিনের সাহসিকতার ইতিহাস কখনও ভয় দেখিয়ে থামানো যাবে না।”

উপত্যকায় তল্লাশি এখনও চলছে। ঘটনার তদন্তও জারি রয়েছে।