নওগাঁওয়ের পোস্টারই সূত্র! শ্রীনগরের পুলিশের বুদ্ধিতে কীভাবে ফাঁস হল ভয়ঙ্কর জইশ চক্র

ফরিদাবাদে কাশ্মীরি ডাক্তার গ্রেফতারির পর ফাঁস জইশ-ই-মোহাম্মদের বহু-রাজ্যের জঙ্গি নেটওয়ার্ক। ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার, দিল্লি লালকেল্লা বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে নয়া তদন্তে নেমেছে NIA।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
Umar delhi blast

নিজস্ব সংবাদদাতা: ফরিদাবাদ থেকে ৩৬০ কেজি বিস্ফোরকসহ এক কাশ্মীরি চিকিৎসক গ্রেফতার হওয়ার দুই দিন পরই সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীরা এখন মনে করছেন, এটাই ছিল জইশ-ই-মোহাম্মদের (Jaish-e-Mohammed) বহু-রাজ্যের সন্ত্রাস নেটওয়ার্কের প্রথম সূত্র।

সবকিছুর সূত্রপাত হয়েছিল গত অক্টোবরে। শ্রীনগরের নওগাঁও এলাকায় জইশ-ই-মোহাম্মদের কয়েকটি পোস্টার হঠাৎ দেখা যাওয়ায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ছড়ায়। তখন থেকেই নজরদারি শুরু করেন শ্রীনগরের এসএসপি জি ভি সুন্দরীপ চক্রবর্ত্তী, যিনি আগে পাহালগামের ‘অপারেশন মহাদেব’-এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তদন্তের সূত্রে CCTV ফুটেজ ঘেঁটে চক্রবর্ত্তীর নেতৃত্বে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তিনজন ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’-কে, যাদের পাথর ছোড়ার ইতিহাস ছিল। এই তিনজনকে জেরা করেই উঠে আসে আর এক নাম — মাওলভি ইরফান আহমেদ, শোপিয়ানের এক ইমাম, যিনি আগে গভার্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের প্যারামেডিক্যাল স্টাফ ছিলেন।

delhi red fot blasta

ইরফানকে জেরা করতেই স্পষ্ট হয় ভয়াবহ চক্রান্ত — কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এক ‘হোয়াইট কলার’ সন্ত্রাস মডিউল। তারাই গোপনে তৈরি করছিল বিস্ফোরক জোগান চক্র, যার মূল কারবার চলছিল ফরিদাবাদে।

তদন্তে জানা যায়, শুধু ফরিদাবাদেই নয়, তিনটি রাজ্য থেকে মোট ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, বোমা তৈরির রাসায়নিক, ও একাধিক একে-সিরিজ রাইফেল।

নিরাপত্তা সংস্থার মতে, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সাধারণত সার হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, একইসঙ্গে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরক পদার্থ হিসেবেও কাজ করে। এই উপাদানই সম্ভবত ব্যবহৃত হয়েছিল দিল্লির লালকেল্লার কাছে সোমবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণে, যেখানে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এখন খতিয়ে দেখছে, কীভাবে এমন এক “পড়ুয়া ও পেশাদারদের” জড়িত সাদা কলারের জঙ্গি মডিউল এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পরিবহন করতে পারল — অথচ প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়েই।

এই জঙ্গি চক্রে যুক্ত ডাক্তার, প্রাক্তন ইমাম ও শিক্ষিত পেশাজীবীদের উপস্থিতি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কাছে বড় সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।