নিজস্ব সংবাদদাতা: পাকিস্তানের অত্যন্ত সুরক্ষিত সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে একাধিক বিমান হামলা চালাল ভারত। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর অধীনে রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমান ঘাঁটি, মুরিদ এবং শোরকোটের রফিকি ঘাঁটিতে একযোগে আক্রমণ চালানো হয়েছে। এমনকি বাদ যায়নি সিন্ধের সুক্কুর বিমান ঘাঁটিও। এই পদক্ষেপ ভারতের পক্ষ থেকে একটি কড়া বার্তা বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরে অবস্থিত নূর খান ঘাঁটি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বেস। এখানে রয়েছে VIP পরিবহণ স্কোয়াড্রন, প্রশিক্ষণ কলেজ এবং একাধিক যুদ্ধ বিমান স্কোয়াড্রন। এত উচ্চ নিরাপত্তার মধ্যেও ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণ এই বার্তা দেয় যে, পাকিস্তানের ‘রেড জোন’ও এখন নিরাপদ নয়।
/anm-bengali/media/post_attachments/2182bf23-160.png)
অন্যদিকে, চাকওয়াল জেলার এই ঘাঁটি থেকে সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে UAV (ড্রোন) হামলার ছক কষা হচ্ছিল বলে জানায় সূত্র। এখানে মোতায়েন রয়েছে উন্নত ড্রোন শাহপার-১ ও বাইরাক্তার TB2। এই ঘাঁটিতেই পাকিস্তানের ড্রোন অভিযান নিয়ন্ত্রিত হত। ভারতীয় বাহিনীর নিশানায় থাকা এই কেন্দ্র ধ্বংস হওয়ায় পাকিস্তানের ড্রোন সক্ষমতায় বড়সড় ধাক্কা লাগলো বলেই মনে করা হচ্ছে।
পাঞ্জাবের শোরকোটে অবস্থিত রফিকি বিমান ঘাঁটি JF-17 এবং মিরাজ যুদ্ধবিমানের আবাসস্থল। সম্প্রতি চিনের তৈরি অস্ত্রের মাধ্যমে ভারতের উপর চালানো হামলায় এই ঘাঁটির সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এবার সেখানে কার্যত চুপিসারে ঢুকে আঘাত হানলো ভারত।
সূত্র জানাচ্ছে, ভারতীয় বাহিনী একটি টিউব-লঞ্চড ড্রোন উৎক্ষেপণকারী লঞ্চপ্যাডও ধ্বংস করেছে, যেখান থেকে সীমান্তে হামলার জন্য UAV চালানো হত। এই হামলা চালিয়েছে জম্মুর কাছে মোতায়েন ভারতীয় সেনার একটি ইউনিট।
এই প্রসঙ্গে, ভারতের পশ্চিম সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এক গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি, কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ভূমিকা সিং পাকিস্তানের আক্রমণাত্মক অবস্থানের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
ব্রিফিংয়ে উইং কমান্ডার ভূমিকা সিং বলেন, “ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বেসামরিক এলাকা ও সেনা স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্য করে তারা ব্যবহার করছে মনুষ্যবিহীন যুদ্ধ বিমান, দূরপাল্লার অস্ত্র, বিমান ও যুদ্ধবিমান”।
তিনি আরও জানান, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী বেশিরভাগ আক্রমণকে সফলভাবে প্রতিহত ও নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে কিছু সীমিত ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে বায়ুসেনা। উধমপুর, পাঠানকোট, আদমপুর ও ভূজে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে কর্মী আহত হয়েছেন এবং যন্ত্রাংশের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিরক্ষার পাশাপাশি পাল্টা জবাবের কৌশলও চূড়ান্ত করা হয়েছে। পাকিস্তানের লাগাতার উসকানির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। বিশ্লেষকদের মতে, এই সমন্বিত হামলা পাকিস্তানকে কৌশলগতভাবে ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপে ফেলেছে। ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে - সন্ত্রাস ছড়ালে জবাব আসবেই, তাও সরাসরি সেনা ঘাঁটির গভীরে ঢুকে।