নতুন নিম্নচাপে আরও ভয়াবহ বৃষ্টি আসছে! ইতিমধ্যেই গ্রামে ঢুকে পড়েছে কুমির, থমকে জীবনযাত্রা

ওড়িশার বন্যায় একাধিক গ্রামে কুমির ঢুকে পড়েছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
odisha flood crocodile found

নিজস্ব সংবাদদাতা: ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়া জেলার অবস্থা বন্যার জেরে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। একটানা ভারী বৃষ্টিপাতে ব্রাহ্মণী ও কানি নদীর জল উপচে ঢুকে পড়েছে জেলার বহু গ্রামে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পাট্টামুণ্ডাই ব্লক ও চৌডাকুলাটা এলাকা। রাস্তাঘাট, কৃষিজমি, বসতঘর সবই জলের তলায়।

তবে শুধু জল নয়, আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে গ্রামের মধ্যে কুমিরের আনাগোনা। বন্যার জলে ভেসে এসে একাধিক কুমির ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে—গ্রামের রাস্তা দিয়ে দিব্যি সাঁতার কেটে যাচ্ছে কুমির। কেউ কেউ তাদের ধানের খেত বা উঠোনে কুমির ভেসে থাকার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন। এই অপ্রত্যাশিত বিপদে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা সন্ধ্যার পর কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখছেন না।

যদিও এখনও পর্যন্ত কুমিরের আক্রমণে কারও আহত হওয়ার খবর নেই, তবু প্রশাসন ঝুঁকি নিতে চাইছে না। বন দফতর ইতিমধ্যে সতর্কবার্তা জারি করে জানিয়েছে—বন্যার জলে না নামতে এবং সাপ ও কুমির নিয়ে সতর্ক থাকতে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও ত্রাণে নেমেছে। অন্তত ৩০টির বেশি গ্রামে শুকনো খাবার ও পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে।

এখানেই শেষ নয়। আগামী দিনে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া দফতর। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের (IMD) পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৪ জুলাই নাগাদ বঙ্গোপসাগরে একটি নতুন নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এর প্রভাবে ২৩ জুলাই থেকেই রাজ্যের উপকূলবর্তী এবং উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। ফলে বর্তমানে যে বন্যা পরিস্থিতি চলছে, তা আরও খারাপ দিকে মোড় নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Flood

বন্যার জেরে শুধু মানুষ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থাও। জলমগ্ন রাস্তার কারণে বহু শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী স্কুলে পৌঁছাতে পারছেন না, যার ফলে বহু স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। একাধিক রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, কেন্দ্রাপাড়ার একটি ব্লকের অন্তত ৩০টি গ্রাম পুরোপুরি বাইরের জগত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নীচু এলাকায় বসবাসকারী বহু পরিবার ঘরছাড়া, কেউ কেউ গবাদি পশু নিয়েই উঁচু জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন।

বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে জীবনযাত্রা থমকে যাবে—এই আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। কুমিরের উপস্থিতি যেন এই দুর্যোগের মধ্যে এক নতুন ভয়াবহতা এনে দিয়েছে। প্রশাসনের কাছে এটি এখন এক বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।