লালকেল্লা বিস্ফোরণের সন্ত্রাস-তহবিলে আল-ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা? গ্রেপ্তার প্রতিষ্ঠাতা জওয়াদ সিদ্দিকি

ফরিদাবাদের আল-ফলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জওয়াদ আহমেদ সিদ্দিকিকে কোটি টাকার মানি লন্ডারিং, ভুয়ো UGC–NAAC স্বীকৃতি এবং সন্ত্রাস-তহবিলের সন্দেহে গ্রেপ্তার করল ইডি।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
al falah university founder

নিজস্ব সংবাদদাতা:  ফরিদাবাদের আল-ফলাহ ইউনিভার্সিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রশ্নচিহ্ন আরও গভীর হল। মঙ্গলবার ইডি গ্রেপ্তার করল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও আল-ফলাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান জওয়াদ আহমেদ সিদ্দিকিকে। অভিযোগ—বহু কোটি টাকার বেআইনি লেনদেন, তহবিল অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া, ভুয়ো স্বীকৃতি দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বাড়ানো এবং তারই ফাঁকে সন্ত্রাসে অর্থপাতের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থা।

ইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং আল-ফলাহ গ্রুপ যেভাবে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, তার সঙ্গে আর্থিক নথির কোনও মিল নেই। আল-ফলা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট—যার প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিকি—১৯৯৫ সাল থেকে গ্রুপের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও আর্থিক পরিচালনাকারী হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু সেই আর্থিক লেনদেনে দুর্নীতির আঁচ মিলতেই তদন্ত শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা দপ্তর, দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বাড়ি—সব জায়গা থেকেই পাওয়া যায় কোটি কোটি টাকার সন্দেহজনক নথি। বাজেয়াপ্ত করা হয় ৪৮ লক্ষ টাকার নগদ, ডিজিটাল ডিভাইস এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।

তদন্তে উঠে এসেছে, বিশ্ববিদ্যালয় নাকি ভুয়ো দাবি করত যে তারা NAAC মান্যতা পেয়েছে এবং UGC-এর 12(B) বিভাগের অধীনে অনুদান পাওয়ার যোগ্য। অথচ, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধু 2(f) ক্যাটেগরিতে তালিকাভুক্ত একটি রাজ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়—UGC নিজেই পরে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়। অভিযোগ আরও—বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি, নির্মাণ কাজ, ক্যান্টিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাপ্লাই কন্ট্রাক্ট দেওয়া হত সিদ্দিকির স্ত্রী ও সন্তানের নামে পরিচালিত কোম্পানিগুলিকে।

delhi red fot blasta

আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, এই টাকা-পয়সার জালিয়াতির একটা অংশ নাকি যুক্ত ছিল ১০ নভেম্বর দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সন্ত্রাস মডিউলের সঙ্গে। সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ১৪ জনের। ইডি এখন খতিয়ে দেখছে, আল-ফলা গ্রুপ থেকে কোনো অর্থ ওই চক্রে গিয়েছিল কি না। কারণ, যে জাল নেটওয়ার্ক ধরা পড়েছে, তা ছড়িয়ে আছে কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানাজুড়ে; উদ্ধার হয়েছে ২,৯০০ কেজিরও বেশি বিস্ফোরক। এই চক্রের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন আল-ফলা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক—ড. মুজাম্মিল গণাই ও ড. শাহীনা সায়েদ—যাদের আগেই গ্রেপ্তার করেছে নিরাপত্তা সংস্থা।

ইডির দাবি, তদন্তে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট—ট্রাস্টের টাকা ছিল সিদ্দিকির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। কোথায় কত টাকা যাবে, কার নামে শেল কোম্পানি খোলা হবে, কোন চুক্তি কে পাবে—সব সিদ্ধান্তই নিতেন তিনিই। সেই আর্থিক কারসাজির জন্যই মঙ্গলবার তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে, আরও অনেকের নাম উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে ইডি।