স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিল! কীভাবে জঙ্গিদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে আদিল ঠোকরে

পাকিস্তানে প্রবেশের পর আট মাস আদিলের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
adil kothar

নিজস্ব সংবাদদাতা: পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন জঙ্গি আদিল ঠোকরের বাড়ি কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার বিজবেহরার গুরি গ্রামে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে আদিল স্টুডেন্ট ভিসায় পাকিস্তান গিয়েছিল, কিন্তু সেখান থেকে সে ফিরে আসে প্রশিক্ষিত জঙ্গি হিসেবে।

তথ্য অনুযায়ী, গুরিগ্রামে বেড়ে ওঠা আদিলের মধ্যে আগে থেকেই উগ্রপন্থার ঝোঁক দেখা গিয়েছিল। পাকিস্তান যাওয়ার আগে থেকেই বিভিন্ন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। ২০১৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসার আড়ালে সে পাকিস্তানে পৌঁছয় এবং এরপর থেকেই সে পুরোপুরি লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায়। পরিবারের সঙ্গেও সে সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করে দেয়। যদিও গোয়েন্দারা তার পরিবারের উপর নজর রেখেছিলেন, কিন্তু বড় কোনও তথ্য উদ্ধার হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

টানা ৮ মাস আদিলের কোনও খোঁজ মেলেনি। ওই সময় সে আদর্শগত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্যারামিলিটারি জঙ্গি ট্রেনিংও নেয়। এই সময়ই আদিল লস্কর-ই-তৈবার সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়। ২০২৪ সালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আবার আদিলের উপস্থিতি ভারতে শনাক্ত হয়। জানা যায়, সে পুঞ্চ-রাজৌরির দুর্গম জঙ্গল ও পাহাড়ি রাস্তায় ব্যবহার করে ভারতে প্রবেশ করে। এই অঞ্চলগুলি স্বাভাবিক নজরদারির বাইরে থাকায় চুপিসারে ঢুকে পড়া সহজ হয়েছে তাদের জন্য।

pahalgam terrorists

সূত্র বলছে, পহেলগাঁও হামলায় জড়িত আরেক জঙ্গি, পাকিস্তানি নাগরিক হাসিম মুসাকে নিয়েও ভারতে প্রবেশের ব্যবস্থা করেছিল আদিল। অনন্তনাগে পৌঁছে আদিল পুরোপুরি আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যায়। জঙ্গলের ফাঁকা রুট এবং পাহাড়ি পথ ব্যবহার করে সে যাতায়াত করছিল। একবার কিশতোয়ার এলাকায় তার উপস্থিতির ইঙ্গিত মিললেও পরে আবার সে অদৃশ্য হয়ে যায়। এমনও বলা হচ্ছে, গুরিগ্রামের কোনও বিচ্ছিন্ন এলাকায় আদিল তার পাকিস্তানি সঙ্গীকে আশ্রয় দিয়েছিল।

কয়েক সপ্তাহ ধরে আদিল উপত্যকায় আত্মগোপন করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময় সে কাশ্মীরে সুপ্ত সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কগুলোকে সক্রিয় করার চেষ্টা করে এবং পরিকল্পনা করে নতুন হামলার। আদিল যখন হামলার লক্ষ্য স্থির করছিল, তখনই কাশ্মীরে পর্যটন কেন্দ্রগুলি পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া হচ্ছিল—এই সুযোগকেই কাজে লাগায় জঙ্গিরা।

শেষমেশ, ২২ এপ্রিলের সেই ভয়াল দুপুরে, আদিল ও তার সঙ্গীরা পহেলগাঁওয়ে হামলা চালিয়ে ২৬ জন নিরীহ পর্যটককে নির্মমভাবে হত্যা করে, ভূস্বর্গ কাশ্মীরের মাটিকে রক্তাক্ত করে তোলে।