/anm-bengali/media/media_files/2025/11/18/australia-2025-11-18-20-55-23.png)
নিজস্ব সংবাদদাতা: সিডনির হর্নসবি এলাকায় ঘটে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা, যার আঘাতে প্রাণ হারালেন ৩৩ বছর বয়সি ভারতীয় বংশোদ্ভূত সামান্বিথা ধরেশ্বর এবং তাঁর গর্ভের আট মাসের শিশু। শুক্রবার রাতে স্বামী ও তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটছিলেন সামান্বিথা। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা একটি পার্কিং গ্যারাজের প্রবেশপথের কাছে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সেই সময় একটি কিয়া গাড়ি ধীরে এসে থামায়, যাতে পরিবারটি নিরাপদে হেঁটে যেতে পারে।
কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তেই পিছন দিক থেকে দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে একটি বিএমডব্লিউ। ১৯ বছর বয়সি অ্যারন পাপাজোগলুর চালানো গাড়িটি এতটাই জোরে ধাক্কা মারে যে কিয়াটি সামনের দিকে ছিটকে গিয়ে সোজা আঘাত করে সামান্বিথাকে। ধাক্কাটি এত প্রবল ছিল যে তিনি গুরুতরভাবে আহত হন। ঘটনাস্থলেই প্যারামেডিকরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং পরে দ্রুত ওয়েস্টমিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে এবং তাঁর গর্ভের শিশুকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
/filters:format(webp)/anm-bengali/media/media_files/2025/02/13/qx1Ew5zP7ESSqQP67G34.jpg)
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার পরবর্তী তদন্তে দেখা যায়, বিএমডব্লিউটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল বলে সন্দেহ। যদিও প্রসিকিউশন জানিয়েছে, স্পিড প্রমাণ করার জন্য আরও নির্দিষ্ট তথ্য প্রয়োজন। ঘটনাটি ঘটার কয়েক ঘণ্টা পর অ্যারনকে তাঁর ওয়াহরুঙ্গার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বিপজ্জনক ড্রাইভিং করে মৃত্যু ঘটানো, অবহেলাজনিত ড্রাইভিংয়ে মৃত্যু ঘটানো এবং ভ্রূণের মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালতে তাঁর জামিনের আবেদনও নাকচ করে দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট রে প্লিবার্সেক। তিনি ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত মর্মান্তিক’ বলে বর্ণনা করেন এবং বলেন, এই দুর্ঘটনা দুই পরিবারের জীবনই চিরতরে ওলটপালট করে দিয়েছে।
সামান্বিথা পেশায় ছিলেন একজন আইটি সিস্টেম অ্যানালিস্ট এবং আলসকো ইউনিফর্মস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। তাঁর জীবন, কর্মক্ষেত্র এবং মাতৃত্বের আনন্দ—সবই নিমেষে থেমে যায় এক বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায়।
দুর্ঘটনাস্থলে স্থানীয় মানুষ ফুল, কার্ড এবং শোকবার্তা রেখে যাচ্ছেন। এক মহিলা, যিনি সামান্বিথার শেষ মুহূর্তের সাক্ষী, একটি কার্ডে লিখেছেন—“শব্দে বোঝানো যায় না, কতটা দুঃখজনক এই ঘটনা। আমি তোমার শেষ মুহূর্তে এখানে উপস্থিত ছিলাম। তোমার এবং তোমার শিশুর শান্তি কামনা করি।”
সিডনির মানুষ শোকাহত। ভারতীয় সম্প্রদায় শোকে স্তব্ধ। দুই পরিবার চিরতরে ভেঙে গেল—কিছু প্রশ্ন রেখে, কিছু ব্যথা নিয়ে, আর এক গভীর অন্ধকার স্মৃতি যেটা কোনওদিনও ভুলবে না কেউ।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us