কোভিডের কারণে দ্বিতীয় বারের জন্য বন্ধ হল ৩০০ বছরের প্রাচীন মেলা

author-image
Harmeet
আপডেট করা হয়েছে
New Update
কোভিডের কারণে দ্বিতীয় বারের জন্য বন্ধ হল ৩০০ বছরের প্রাচীন মেলা

দিগবিজয় মাহালি, মেদিনীপুরঃ কোভিডের ধাক্কায় দ্বিতীয় বারের জন্য বন্ধ হল সবং ব্লকের ৩০০ বছরের প্রাচীন তুলসী চারার মেলা। সংক্রমণ রুখতে মেলাকে কেন্দ্র করে জমায়েত ও মেলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে এই তুলসী চারা মেলা বসে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের কোলন্দা মৌজায়। এই মেলা শুরুর দিন থেকেই হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হয়। প্রায় ১২-১৪ বিঘা জায়গা জুড়ে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১২০০ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে মেলায় দোকান বসান। হাড়ি,কোদাল,মাদুর,থেকে শুরু করে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মিলে এই মেলায় বসেন।
অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর থানার গোপালপুর মৌজা এলাকায় গোকুলানন্দ জিউ মন্দির রয়েছে। পৌষ সংক্রান্তির সকালেই পুণ্যার্থীরা গোকুলানন্দ জিউ মন্দিরে মাটি দেওয়ার জন্য প্রচুর পুণ্যার্থী জমায়েত হয় মন্দির প্রাঙ্গণে। ভক্তদের প্রচুর প্রণামী জমা পড়ে। প্রণামীর টাকায় সারাবছর মন্দিরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘এখানকার এই মেলার আলাদা ঐতিহ্য আছে। পূর্ব -পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মধ্যে এটি প্রাচীন মেলা। তাই বহু দূর থেকে সাধারণ মানুষ এখানে আসেন। এই বছর মেলা হবে না শুনেই মন খারাপ সকলের। তবে সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে হবে।’ স্থানীয় জিলিপি ও কদমা ব্যবসায়ী বলেন, ‘এই মেলায় বিখ্যাত কদমা ও জিলিপি। প্রতি বছর প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। ক্রেতারা আসেন জিলিপি,কদমা নিয়ে যান নামও করেন। ভালো টাকার বিক্রি-বাটা হয়, কিন্তু গতবছরের ন্যায় এবছরও মেলা না হওয়ায় বড়সড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এই মেলার উপর আমরা ভরসা করে থাকি।’
মেলা কমিটির সদস্য তরুণ কান্তি দাস বলেন, ‘এখানকার মেলা প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো। এক সপ্তাহ ধরে চলে মেলা। আমরা আশা করেছিলাম যে এই বছর মেলা হবে মানুষ একটু আনন্দ উপভোগ করবে। কিন্তু কোভিডের কারণে গতবছর মেলা হয়নি। এবছরও প্রশাসন সমস্ত জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাই প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় কমিটির পক্ষ থেকে মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসক মহল জানিয়েছেন, মেলা হলে সেখান থেকে সংক্রমণ গোটা গ্রাম জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকত।
কারণ মেলায় আসা প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে সংক্রমণের ব্যাপার নিয়ে হুশ থাকে না। তাছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ওমিক্রণ খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যা অতি সংক্রামক। ফলে এই সিদ্ধান্ত সময়ের বিচারে অত্যন্ত কার্যকরী।