বৌমার উপর লক্ষীর ভর করতেই গড়বেতার সাহা বাড়িতে শুরু হয় লক্ষীপুজো

author-image
Harmeet
New Update
বৌমার উপর লক্ষীর ভর করতেই গড়বেতার সাহা বাড়িতে শুরু হয় লক্ষীপুজো



নিউজ ডেস্কঃ গোয়ালতোড় :-
বৌমার উপর ধনদেবীর ভর। আর তা দেখেই নিজের বাড়িতে মা লক্ষীর আরাধনা শুরু করেন গড়বেতার গদাধর সাহা।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতার খড়কুশমা একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম। এই গ্রামেই বাস করতেন গদাধর সাহা। জমি জায়গার অভাব ছিল না। ফলে জমিতে চাষাবাদ করেই সংসার চালাতেন৷ স্ত্রী আর দুই পুত্র কে নিয়ে সংসার। দুই পুত্র নারায়ণ ও ফকির। দুই পুত্রের বিয়েও দিয়ে দেন তিনি। ফকির সাহার বিয়ে হয় বিজন বালা সাহার সঙ্গে। বিজন বালা ছিলেন অপরুপা সুন্দরী ও খুব করিৎকর্মা। একা হাতেই সংসারের পুরো দায়িত্ব সামলাতেন।এক শরতে আগমনির সুর বেজে উঠেছে। মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের আগায় বিন্দু বিন্দু শিরিরের প্রলেপ। ঠিক এমনই এক সন্ধ্যায় বাড়িতে সবাই যখন বসে আগামী দিনের গল্পে মশগুল সেই সময় হঠাৎ করেই বিজন বালা দেবীর উপর মা লক্ষীর ভর হয়। প্রথমে বাড়ির সকলেই হতচকিত হয়ে পড়ে। পরে মা লক্ষী স্বয়ং ভরে বার্তা দেন তার আরাধনা করার। সেই দিন রাত্রেই গদাধর সাহা যখন ঘুমাচ্ছিলেন সেই সময় দেবী তাকে ফের স্বপ্নে দেখা দিয়ে নিজের বাড়িতে তার আরাধনার কথা জানান৷ স্বপ্নের ঘোরেই তিনি দেখেন যে চারিদিকে যেন আলোর রোশনায়ে ভরে উঠেছে। বাজছে শাঁখ, কাঁসর, ঢোল, সানাইয়ের বাদ্য৷ সকালে উঠেই তিনি পরিবারের বাকি সদস্যদের কাছে তার রাত্রের স্বপ্নের কথা জানালে সেদিনই সকলেই ঠিক করেন দেবীর আরাধনার কথা৷ তারপর থেকে মন্ডপেই পুজো হয়ে থাকে। বর্তমানে মন্দির সংস্কার করে মার্বেল পাথর বসানো হয়েছে।

 গদাধর সাহার মৃত্যুর পর তার ছেলেরা পুজোর দায়িত্ব নেয়। প্রায় একশ বছর এই ভাবেই পুজো হয়ে আসছিল। কিন্তু ফকির সাহা ও নারায়ণ সাহার মৃত্যু হলে তাদের ছেলেরা প্রতি বছর এক একজন করে পুজোর দায়ভার নিয়ে পুজো করতে শুরু করে। কিন্তু এবছর পুজোর ১২৬ বছরে পড়লো। পরিবারের সদস্য সান্তনু সাহা বলেন , 'আমাদের এই সাহা পরিবারের পুজো প্রতিবছর বারি করে পালিত হয়। এবার পুজোর বারি পড়েছে আমাদের৷ চারদিন ধরে এই পুজোতে যেখানে পরিবারের সকল আত্মীয় স্বজন আসতেন এবার তা হচ্ছে না৷ আর যারা উপস্থিত থাকবেন তাদের প্রত্যেকের মাস্ক অবশ্যই থাকবে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে পুজো অর্চনা হবে৷ প্রতিদিন মন্ডপে স্যানিটাইজার করা হবে'।তবে খড়কুশমার সাহাদের পরিবারের এই লক্ষী পুজো সাহা পরিবারের হলেও বর্তমানে তা গ্রামের সকলের পুজো হয়ে উঠছে। সাহাদের এই পুজোতে গ্রামের মানুষের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতোই।